Bunohash Banner

কবি নির্মলেন্দু গুণের ৮০তম জন্মদিন আজ

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণ আজ ২১ জুন (সোমাবার) ৮০ বছরে পা রাখছেন। ১৯৪৫ সালের ২১ জুন নেত্রকোনার কাশবন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জীবনের প্রায় আট দশকের প্রান্তে দাঁড়িয়েও কবি লিখে চলেছেন; কলমের তুলিতে ফুটিয়ে তুলছেন অনুভূতির অনন্য ছবি।

নির্মলেন্দু গুণের মা বীণাপাণি ও বাবা সুখেন্দু প্রকাশ গুণ। বারহাট্টার করোনেশন কৃষ্ণপ্রসাদ ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৬২ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন তিনি। এর আগেই নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতা ‘নতুন কাণ্ডারী’।

১৯৬৪ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসিও পাস করেন তিনি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে ভর্তির জন্য মনোনীত হলেও ঢাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হওয়ায় তিনি গ্রামে চলে যান। পরে ফিরে এসে দেখেন, তার নাম তালিকা থেকে লাল কালি দিয়ে কেটে দেওয়া হয়েছে। ১৯৬৯ সালে তিনি প্রাইভেটে বিএ পাস করলেও সার্টিফিকেট তোলেননি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, শ্রেণিসংগ্রাম, প্রেম-বিরহ, জীবন-প্রকৃতি আর স্বপ্ন দেখার তীব্র ঘোর তার কবিতার প্রাণশক্তি।

কবিতার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় গল্প, আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ও ভ্রমণসাহিত্যও রচনা করেছেন নির্মলেন্দু গুণ। প্রথম কবিতার বই ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ লিখেই কাব্যজগতে নিজের আসন স্থায়ী করে নেন তিনি। এ গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা ‘হুলিয়া’ কবিতাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে এর ওপর ভিত্তি করে তানভীর মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এ ছাড়া তার ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য।

সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য নির্মলেন্দু গুণ ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১১ সালে একুশে পদক, ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার ও ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।

কাব্যগ্রন্থ
মুজিব-লেনিন-ইন্দিরা
প্রেমাংশুর রক্ত চাই (১৯৭০)
না প্রেমিক না বিপ্লবী (১৯৭২)
কবিতা, অমিমাংসিত রমণী (১৯৭৩)
দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী (১৯৭৪)
চৈত্রের ভালোবাসা (১৯৭৫)
ও বন্ধু আমার (১৯৭৫)
আনন্দ কুসুম (১৯৭৬)
বাংলার মাটি বাংলার জল (১৯৭৮)
তার আগে চাই সমাজতন্ত্র (১৯৭৯)
চাষাভুষার কাব্য (১৯৮১)
অচল পদাবলী (১৯৮২)
পৃথিবীজোড়া গান (১৯৮২)
দূর হ দুঃশাসন (১৯৮৩)
নির্বাচিতা (১৯৮৩)
শান্তির ডিক্রি (১৯৮৪)
ইসক্রা (১৯৮৪)
প্রথম দিনের সূর্য (১৯৮৪)
আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও (১৯৮৪)
নেই কেন সেই পাখি (১৯৮৫)
নিরঞ্জনের পৃথিবী (১৯৮৬)
চিরকালের বাঁশি (১৯৮৬)
দুঃখ করো না, বাঁচো (১৯৮৭)
১৯৮৭ (১৯৮৮)
যখন আমি বুকের পাঁজর খুলে দাঁড়াই (১৯৮৯)
ধাবমান হরিণের দ্যুতি (১৯৯২)
কাব্যসমগ্র, ১ম খণ্ড (১৯৯২, সংকলন)
কাব্যসমগ্র, ২য় খণ্ড (১৯৯৩, সংকলন)
অনন্ত বরফবীথি (১৯৯৩)
আনন্দউদ্যান (১৯৯৫ )
পঞ্চাশ সহস্র বর্ষ (১৯৯৫ )
প্রিয় নারী হারানো কবিতা (১৯৯৬)
শিয়রে বাংলাদেশ
ইয়াহিয়াকাল (১৯৯৮ )
আমি সময়কে জন্মাতে দেখেছি (২০০০)
বাৎস্যায়ন (২০০০)

গল্পগ্রন্থ
আপন দলের মানুষ
পোড়ামাটি

ছড়ার বই
সোনার কুঠার (১৯৮৭)

আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ
আমার ছেলেবেলা
আমার কণ্ঠস্বর
আত্মকথা ১৯৭১ (২০০৮)

অনুবাদ
রক্ত আর ফুলগুলি (১৯৮৩)

@নিউজজি,উইকিপিডিয়া